গাজীপুরের শ্রীপুরে চাঁদা না দেওয়ায় পরিবহন শ্রমিকদের ওপর হামলা, বাস ভাঙচুর এবং এক হেলপারকে তুলে নেওয়ার ঘটনার প্রতিবাদে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করেছেন পরিবহন শ্রমিকরা।
সোমবার (২ জুন) সকাল সাড়ে ৬টা থেকে প্রায় ৩ ঘণ্টা জৈনাবাজার এলাকায় মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন তারা।
শ্রমিকরা জানান, গাজীপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মকবুল হোসেন মেম্বার এবং তার ছেলে স্থানীয় ছাত্রলীগ নেতা ফাহিম আহমেদ রোববার চাঁদা দাবি করেন। চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানালে তারা শ্রমিকদের মারধর করেন এবং একটি গাড়ি ভাঙচুর করেন। এক গাড়ির হেলপারকেও তুলে নিয়ে যান তারা। যার সন্ধান এখনও পাওয়া যায়নি।
শ্রমিকরা আরও জানান, তারা তাদের সহকর্মীর সন্ধান ও ঘটনার সুষ্ঠু বিচারের দাবিতে মহাসড়ক অবরোধ করেছেন। এতে করে মহাসড়কের উভয় পাশে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে আলোচনা করে।
বিজ্ঞাপন
এ দিকে স্থানীয় বাসিন্দা ও প্রত্যক্ষদর্শী এমসি বাজার এলাকার রিদিশা পোশাক কারখানার শ্রমিক রেজাউল করিম ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, বাস শ্রমিকরা সকাল থেকে মহাসড়কে তাদের যানবাহন এলোমেলোভাবে রেখে সড়ক অবরোধ করে রাখে। এতে করে আমরা যারা পোশাক কারখানায় চাকরি করি তাদের বিড়ম্বনায় পড়তে হয়েছে। এক মিনিট লেট করে অফিসে প্রবেশ করলে আমাদের হাজিরা ৫০০ টাকা কেটে রাখা হয়। মাসের ৫ থেকে ৬ দিন কোনো না কোনো কারণে বিভিন্ন শ্রেণি, পেশা এবং সংগঠনের কর্মীরা সড়ক অবরোধ করে রাখেন। এতে করে আমরা যারা সাধারণ মানুষ আছি তাদের অনেক ক্ষতি হয়ে যায়।
জৈনা বাজারের মুদি ব্যবসায়ী ছলিম উদ্দিন বলেন, প্রায়ই মহাসড়ক অবরোধের ঘটনা ঘটছে। কখনো পোশাক শ্রমিক, কখনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা, কখনো বাস শ্রমিকরা তাদের দাবি দাওয়া নিয়ে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করছেন। এতে করে এ সড়কে চলাচলকারী যাত্রী, আশপাশের স্কুল কলেজগামী শিক্ষার্থী এবং পোশাক শ্রমকিসহ বিভিন্ন অফিসগামী যাত্রীদের দুর্ভোগ নিয়ে গন্তব্য যেতে হচ্ছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক গাজীপুর শহরের একটি ব্যাংকের কর্মকর্তা বলেন, আমাকে প্রতিদিন জৈনাবাজর থেকে গাজীপুরে গিয়ে অফিস করতে হয়। আসা-যাওয়ার পথে মাসের ১০ থেকে ১২ দিন এই মহাসড়কের কোথাও না কোথাও সড়ক অবরোধের ঘটনা ঘটছে। এতে করে যেমন আমাদের সময় নষ্ট হয়, তেমনি লেট হয়ে গেলে অফিসের সিনিয়রদের কথা শুনতে হয়। আমরা আছি মহাবিপদে। কোনো কিছু দাবি উঠলেই সবাই মহাসড়কে এসে অবস্থান নিয়ে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করতে থাকেন। যেন কারো কিছু বলার নেই। যে যার মতো করে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করে যাচ্ছে।
এ বিষয়ে শ্রীপুর থানার ওসি মো. আব্দুল বারিক বলেন, খবর পেয়ে আমরা দ্রুত ঘটনাস্থলে যাই এবং শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলে সড়ক থেকে তাদের সরিয়ে দেই। বর্তমানে যান চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, অভিযোগের ভিত্তিতে আমরা তদন্ত শুরু করেছি। দোষীদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।